
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকার রাজারবাগ কালীবাড়ি এলাকায় ডি-৮ ও এমএস ডিলার মো. আমিনুল ইসলাম মেহেদীর নেতৃত্বে দুই সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় আহত হয়ে একজন সাংবাদিক বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ সময় তাদের ব্যবহৃত ক্যামেরা, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
আহতরা হলেন—দৈনিক চৌকস পত্রিকার সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন এবং ক্যামেরাপার্সন আরিয়ান হোসেন আবিদ। বর্তমানে ক্যামেরাপার্সন আরিয়ান হোসেন আবিদ মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভর্তি রয়েছেন।
জানা যায়, গত ১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকেল আনুমানিক ৪টায় রাজারবাগ কালীবাড়ি পয়েন্ট সংলগ্ন মাটির রাস্তায় ডিলার আমিনুল ইসলাম মেহেদী ট্রাকে করে ওএমএসের চাল ও আটা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ না করে অর্ধেক ট্রাক অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সময় সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন বিষয়টি ক্যামেরায় ধারণ করেন।
এ সময় ঢাকা রেশনিংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত তদারককারী কর্মকর্তা তারিকুল ইসলামকে ফোনে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি ঘটনাস্থলে ডিলার আমিনুল ইসলাম মেহেদীকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। সাংবাদিকরা অবিক্রীত পণ্যের ব্যালেন্স দেখাতে বললে তা দেখাতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় তদারককারী কর্মকর্তা ও ডিলার সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে ঘুষের প্রস্তাব দেন। ঘুষ নিতে অস্বীকার করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তদারককারী তারিকুল ইসলাম ও ডিলার আমিনুল ইসলাম মেহেদী সাংবাদিকের ওপর চড়াও হন।
ভিডিও ধারণ করতে গেলে ডিলার আমিনুল ইসলাম মেহেদী জোরপূর্বক ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন। এরপর আমিনুল ইসলামের ডাকে আরও ১০-১২ জন ঘটনাস্থলে এসে সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন ও ক্যামেরাপার্সন আরিয়ান হোসেন আবিদকে উপর্যুপরি মারধর করে রক্তাক্ত জখম করেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, হামলার সময় একটি জাপানি সনি ফুল এইচডি ক্যামেরা, একটি ডিএসএলআর ডি-৭০০০ ক্যামেরা, একটি অপো মোবাইল ফোন, একটি হেলমেট এবং নগদ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
পরবর্তীতে আহত অবস্থায় দুই সাংবাদিক মোটরসাইকেলে করে সবুজবাগ থানায় উপস্থিত হন। থানার অফিসার ইনচার্জকে বিস্তারিত জানানো ও ভিডিও ফুটেজ দেখানোর পর তাদের চিকিৎসার জন্য মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা পুনরায় থানায় এসে পুলিশকে লিখিত কেইস রিপোর্ট প্রদান করেন।
অফিসার ইনচার্জ তদন্ত কর্মকর্তােকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং ডিউটি অফিসারকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি সনি ক্যামেরা উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও ডিএসএলআর ক্যামেরা, মোবাইল ফোন, হেলমেট ও নগদ টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় ডি-৮-এর তদারককারী কর্মকর্তা তারিকুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। একইভাবে অভিযুক্ত ডিলার আমিনুল ইসলাম মেহেদীকেও ফোনে পাওয়া যায়নি।
সাংবাদিক সমাজ মনে করে, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য হুমকিস্বরূপ। বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।